বিএনপি নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ চায়

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান খান রিপন দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি টক শোতে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “আমি অতটা নেতিবাচক হতে চাই না। বরং কিছুটা আশাবাদী হতে চাই। গোলটা বেড়েছে ডিসেম্বর না জুন – উনি বলছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে। আমরা বলেছি একটা সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ চাই এবং আমরা পছন্দ করব ডিসেম্বরেই হোক, কারণ ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রোজা শুরু হবে।”

রিপন দেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের সেনাপ্রধান অনেক আগেই বলেছিলেন, একটা ভালো নির্বাচন আয়োজনের জন্য ১৮ মাস যথেষ্ট। তিনি হিসাব-নিকাশ না করে বলেননি। পুলিশ বিভাগের দুর্বলতা, অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্যদের পালিয়ে যাওয়া – এসব সবই তার জানা। জেনেশুনেই তিনি বলেছেন ১৮ মাসের মধ্যে ভালো নির্বাচন সম্ভব। তবে এর মানে এই নয় যে অবশ্যই ১৮ মাস পার হতে হবে।”

নির্বাচনী সংস্কার বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে রিপন বলেন, “আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমার দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চাও আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দ্বিকক্ষ ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য বলে মনে করি না, এটা আমার ভিন্ন মত। কিন্তু পার্টির সিদ্ধান্তের প্রতি আমি ১০০% শ্রদ্ধাশীল।”

প্রার্থীতার মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে রিপন বলেন, “দলগুলো যদি আমেরিকার মতো প্রাইমারি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করত, তাহলে মনোনয়ন নিয়ে সংঘাত কমত। আমি দেখেছি আওয়ামী লীগের আমলে নমিনেশন না পেয়ে অনেকে গাছ কেটে রাস্তা ব্লক করেছে। এটা কেন? আপনার দল আপনাকে নমিনেশন দেয়নি বলে আপনি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন কেন?”

আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার পেছনে কি কোন গোপন এজেন্ডা আছে? ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে না কেন? যদি ছাত্রলীগের কাজের জন্য তাদের নিষিদ্ধ করা যায়, তাহলে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল।”

রিপন সতর্ক করে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের সুযোগ তত বাড়বে। কেউ কেউ মনে করেন নির্বাচন বিলম্বিত হলে নতুন দল বা জামাতের সুবিধা হবে, কিন্তু আমার ধারণা উল্টো।”

রিপন তার বক্তব্যের শেষ অংশে গণতন্ত্রে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেন, “৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া উচিত। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারই সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমাদের অভাব হচ্ছে গণতান্ত্রিক চর্চার। এই জিনিসগুলো নিশ্চিত করতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply